Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন

সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন, শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ

মোঃ নাসিরুজ্জামান

আজ ১৬ অক্টোবর ২০২০। বিশ্ব খাদ্য দিবস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এ দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) তার জন্মকাল ১৯৪৫ সাল থেকে ১৬ অক্টোবরকে বিশেষ গুরুত্বসহকারে ‘বিশ^ খাদ্য দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে আসছে। বিশাল পৃথিবীর সব মানুষের জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যের যোগান নিশ্চিতকরণ, পুষ্টিহীনতা দূরীকরণ এবং দরিদ্রতার মূলোৎপাটন করে ক্ষুধামুক্ত নির্মল পৃথিবী গড়ার কাজে FAO নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব খাদ্য দিবস প্রতিপাদ্যভিত্তিক পালিত হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ খাদ্য সুরক্ষা এবং কৃষির বিভিন্ন দিকগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে Grow, nourish, sustain. Together. Our actions are our future যার ভাবানুবাদ ‘সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন, শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ’।


বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষি, যা এ দেশের বিপুল  জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৩%। এ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তাসহ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এখনও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য জীবনের সারাংশ এবং আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মূল ভিত্তি। কোভিড-১৯ মহামারিতে সরকারের মূল লক্ষ্য সবার জন্য নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা, বিশেষ করে যারা দরিদ্র এবং দুর্বল। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বাংলাদেশ কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে আমরা প্রয়োজনীয় খাবারের বেশি উৎপাদন করছি। কিন্তু খাদ্য ব্যবস্থায় ভারসাম্য না থাকায় ক্ষুধা, অপুষ্টি, স্থ‚লতার মতো বিষয়গুলো থেকেই যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। শিশুকাল থেকেই সুষম খাবারের পাশাপাশি নিরাপদ মৌসুমি সবজি ও ফল গ্রহণের খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা এবং গণমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে।


বৈশি^ক মহামারি করোনার দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বিশে^র সঙ্গে বাংলাদেশ বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারতো। কিন্তু তা হয়নি। কারণ সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান কৃষকবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল আবাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং সবার সহযোগিতার ফলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের অসহনীয় দুর্যোগের মাঝেও লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। করোনাকালীন জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিক সরবরাহ এবং যান্ত্রিকীকরণ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষি শ্রমিক সংকটের মধ্যেও হাওড়সহ সারা দেশের বোরো ফসল কর্তন শতভাগ অর্জিত হয়েছে। দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখাসহ দেশে যাতে খাদ্যের কোনো ঘাটতি না হয়, সেজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অভিঘাতসহ বিভিন্ন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য সময় উপযোগী স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।  

 
প্রতি বছর দেশে কৃষি জমির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। সে সাথে মাটির অবক্ষয়, উর্বরতা হ্রাস এবং লবণাক্ততা বাড়ার কারণে মাটির গুণাগুণ হ্রাস পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, খরা, ঝড়, রোগবালাই, নদীভাঙন ইত্যাদি কৃষির অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে প্রতিনিয়ত। গত ১০ বছরে বর্তমান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কালে গৃহীত পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কৃষি উন্নয়নে নানা ধরনের কৃষিবান্ধব নীতি ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কৃষির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সার, বীজসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণের মূল্য হ্রাস করা হয়েছে।


২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর মন্ত্রিপরিষদ সভার প্রথম বৈঠকেই সার ব্যবস্থাপনা সংস্কারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন সার ডিলার ও ৯ জন খুচরা সার বিক্রেতা নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে, সার বিতরণ অনেক সহজ হয়, কৃষকের দোরগোড়ায় সার প্রাপ্তি নিশ্চিত হয় এবং কৃষকের সার প্রাপ্তিতে ভোগান্তির অবসান হয়। বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকার সারের মূল্য ৪ দফায় কমিয়ে কৃষি ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। প্রতি কেজি টিএসপি ৮০ টাকা থেকে ২২ টাকা, এমওপি ৭০ টাকা থেকে ১৫ টাকা, ডিএপি ৯০ টাকা থেকে ২৫ টাকা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডিএপি সারের দাম পুনরায় কমিয়ে কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি মাত্র ১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে, কৃষক স্বল্পমূল্যে সার ক্রয় করতে পারছে। সারের বাজার স্থিতিশীল ও সুষম সার ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ায় খাদ্য উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 
ফসলের উৎপাদন খরচ কমিয়ে সঠিক সময়ে ফলন নিশ্চিত করতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অঞ্চলভেদে শতকরা ৫০ থেকে ৭০ ভাগ ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিস্তৃত করার পাশাপাশি কৃষকদের ঋণ সুবিধা প্রদান, নগদ আর্থিক ও উপকরণ সহযোগিতা প্রদান, নিত্যনতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণ করা হয়েছে। স্বল্প জমি থেকে অধিক উৎপাদনের জন্য কৃষকদের মাঝে ভর্তুকি ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনামূল্যে উচ্চফলনশীল বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষি বিপণন ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সফল ধারাবাহিকতায় বিশ্ব বাংলাদেশ এখন ধান উৎপাদনে তৃতীয়, শাকসবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় ও কাঁচা পাট রপ্তানিতে প্রথম, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম।
ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে খাদ্য উৎপাদনই শেষ কথা নয়। বরং পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের যোগানও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে লক্ষ্যে পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, সহজলভ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয়ে আরো বেশি মনোযোগ প্রয়োজন। সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ জরুরি। পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতকরণে বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন দরকার। সরকারের সঠিক নীতি সহায়তা, প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তাভিত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে পুষ্টিকর খাবার প্রাপ্তি অনেকাংশেই সহজতর হয়েছে। কৃষক ও কৃষি অংশীজনের পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণনে ভবিষ্যতে আরো বেশি সচেষ্ট হতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতা সংস্থা ও সব অংশীজনের সমন্বয়, সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশ^ খাদ্য দিবসের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে। আমরা যদি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের চিত্র পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাই এক অনন্য সাফল্যগাথা। মাত্র দেড় দশকেরও কম সময়ে আমাদের দারিদ্র্য যে হারে কমেছে তা অনেক দেশের জন্যই অনুকরণীয়। বিবিএস-এর সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দরিদ্রতার হার নেমে এসেছে ২০.৫% যা ২০০৫ সালে ছিল ৪০% এবং ২০১৬ সালে ছিল ২৪.৩%। অন্যদিকে ২০১৯ সালে হতদারিদ্র্যের হার নেমে হয়েছে ১০.৫% যা ২০০৫ সালে ছিল ২৫.১% এবং ২০১৬ সালে ছিল ১২.৯%। পুষ্টিসম্মত উন্নত দেশের অভিযাত্রায় সবার কার্যকর অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ, সোনার বাংলা গড়ে তুলতে আমাদের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধামুক্তির সংগ্রামে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, সুশীল সমাজ ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ যথাযথ ভূমিকা রেখে সফলকাম হবে সে প্রত্যাশা আমাদের সবার। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ সফল বাস্তবায়নপূর্বক রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনানুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর কর্মপরিকল্পনা সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।


সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়।  www.moa.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon